চায়না এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘এস্টাব্লিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি (ইডিসি)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় জি-টু-জি পদ্ধতিতে চীনা রাষ্ট্রীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স চায়না রেলওয়ে ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (সিআরআইজি) এর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য, ভৌত কাজ এবং সেবা ক্রয় করবে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৩৯৭৪ কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা টাকা।

সূত্র জানায়, ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো স্থাপন ও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক ‘এস্টাব্লিশিং ডিজিটাল কানেক্টিভিটি (ইডিসি)’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি দেশের সব নাগরিকের জন্য ডিজিটাল সেবা প্রদান, জ্ঞানভিত্তিক দক্ষ সমাজ গঠন এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি গত ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকার ও এক্সিম অব চায়নার অর্থায়নে প্রকল্পটি মোট ৫৮৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয়ে (প্রকল্প সাহায্য ৩৯৭৪ কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা এর মধ্যে প্রিফারেন্সিয়াল বায়ার্স ক্রেডিট (পিবিসি) অনুযায়ী ৮৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩৩৭৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে পাওয়া যাবে) ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে বাস্তবায়িত হবে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের জন্য ল্যাপটপসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, ৫৭টি বিশেষায়িত ল্যাব, সেন্ট্রাল ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের জন্য সার্ভারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি, মাঠ পর্যায়ের ক্লাউড ফাইল সার্ভিস এবং ডিজিটাল স্টোরেজের জন্য কেন্দ্রীয় সার্ভার অবকাঠামো, আইসিটি ল্যাব, স্মার্ট ভার্চুয়াল ক্লাসরুম এবং ডিসট্যান্স লার্নিং প্ল্যাটফর্মসহ প্রয়োজনীয় আইসিটি অবকাঠামো সুবিধা সংবলিত ডিজিটাল লিটারেসিসেন্টার স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হবে।

এছাড়াও প্রকল্পের অধীনে সিআরভিএস বাস্তাবয়নের জন্য সিআরভিএস সেন্ট্রাল আইএসডিপি সার্ভার, ৫৫০০টি এনরোলমেন্ট অবকাঠামো সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ ও ১৭,৩১৪টি সার্ভিস ডেলিভারি ডিভাইস, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় পূর্বাচলে ২১ তলা টাওয়ার নির্মাণ এবং বৈদেশিক ভেন্যুতে ৪০ জন ও বাংলাদেশ ভেন্যুতে ৩৩৩৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় অবকাঠমো স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য, ভৌত কাজ এবং সেবা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) কেনার জন্য ২০২২ সালের ১২ মার্চ চীন সরকারের মনোনীত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স চায়না রেলওয়ে ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (সিআরআইজি) এর কাছ থেকে অনুমোদিত ডিপিপির আলোকে প্রকল্প কর্তৃক প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এ প্রেক্ষিতে সিআরআইজি গত ১৩ মার্চ একটি প্রস্তাব দাখিল করে।

উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের ১২ মার্চ অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুপারিশ অনুযায়ী প্রকল্পটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয় সম্পাদনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে চীন সরকার কর্তৃক পিবিসি এর নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী সিআরআইজিকে ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর মনোনয়ন দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমে গঠিত মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক সিআরআইজির প্রস্তাব বিস্তারিত মূল্যায়ন ও দর কষাকষি কর চূড়ান্ত বিল অব কোয়ানটিটি, টেকনিকাল স্পেসিফিকেশন ও ড্রাফট কনট্রাক্ট সুপারিশ করা হয়। মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় কমিটি প্রতিটি আইটেমের একক মূল্যের বাজার দর যাচাই করে। এবং সিআরআইজি এর প্রস্তাব যৌক্তিক এব ডিপিপিতে নির্ধারিত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করে।

সূত্র জানায়, প্রকল্পে ব্যয় হবে (ভ্যাট/ট্যাক্স ছাড়া) ৪৭৩,৭৫৩,৯৭৪.৯৫ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় ৩৯৭৪ কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা।

 

কলমকথা / সাথী